স্টাফ রিপোর্টার Indiapost24:পশ্চিমবঙ্গে ৮ দফায় বিধানসভা নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি ও প্রচার শুরু করেছে একদিকে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস, অন্যদিকে বিজেপি এবং বাম কংগ্রেস, ও আব্বাস সিদ্দিকীর আই এস এফ এর রাজনৈতিক জোট।এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা।
এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের একুশে নির্বাচনে নির্ঘণ্টও প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রার্থী তালিকাও ঘোষণা করে দিয়েছে তৃণমূল-বিজেপি সংযুক্ত মোর্চা।তবে সবার থেকে একটু এগিয়ে তৃণমূল নেত্রী 291 টি আসনের প্রার্থী তালিকা একসঙ্গে ঘোষণা করেছেন। বিজেপি ও সংযুক্ত মোর্চা প্রথম দুই দফায় আংশিক তালিকা প্রকাশ করেছে।
এদিকে নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিক্ষোভের জেরে অনেকে দল ছেড়েছে তৃণমূল। কেউবা কেঁদে ভাসিয়েছেন কেউ নিজেরাই পার্টি অফিস ভাঙচুর করেছেন।
এই অবস্থায় ক্ষমতায় কে আসবে বাংলায় কি বলছে জনমত সমীক্ষা। সিএনএক্সের সমীক্ষা বলছে এখন ক্ষমতা ফেরার লক্ষ্যে এগিয়ে তৃণমূল। পিছিয়ে রয়েছে বিজেপি।এর আগে এবিপি নিউজ সি ভোটারের সমীক্ষাতেও পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস কেই এগিয়ে রাখা হয়েছিল।এ পর্যন্ত প্রকাশিত সব সমীক্ষাতেই তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও তার প্রবল প্রতিপক্ষ হিসাবে বিজেপির আত্মপ্রকাশের ইঙ্গিত সি ভোটার ও সি এন এক্সের সমীক্ষাতে উঠে এসেছে।
তবে পশ্চিমবঙ্গে এবারের সমীক্ষায় যা উঠে আসছে তা নিয়ে দলের অন্দরে চর্চা হলেও বিজেপি নেতারা এখনও দাবি করে চলেছেন যে তৃণমূলকে সরিয়ে বিজয়ের হাসি তারাই হাসবেন ভোট গ্রহণের পর 2 মে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর। বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন যে সারা রাজ্যে তারা 150 - 165 আসন জিতে ক্ষমতায় আসবেন। এবার তারা 40 থেকে 42 শতাংশের বেশি ভোট পাবেন। বিজেপি নেতারা এখন বাম কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকীর জোটকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না।তাদের অভিযোগ সংযুক্ত মোর্চা বিজেপিকে হারাতে গোপনে মমতা শিবিরের সাথে সন্ধি করে নির্বাচনী প্রচার ও সংগঠন গড়ে তুলছেন।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন নিয়ে সিএনএক্স - এবিপি নিউজ এর দ্বিতীয় দফার জনমত সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের ভোট হলে তৃণমূল পেতে পারে 154 থেকে 164 টি আসন। বিজেপি জিততে পারে 102 থেকে 112 টি আসন।সংযুক্ত মোর্চা পেতে পারে 22 থেকে 30 এবং অন্যান্যরা পেতে পারে 1 থেকে তিনটি আসন।
294 টি কেন্দ্রের মধ্যে 117 টি আসন বেছে নমুনা সংগ্রহ করেছেন সমীক্ষকরা।ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের এই সমীক্ষার সময় তখনো কিন্তু কোন দল প্রার্থী ঘোষণা করেনি।
সিএনএক্স প্রথম দফায় সমীক্ষাটি করেছিল মাসখানেক আগে। সেখানে আসন সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়ে বলা হয়েছিল, এই মুহূর্তে ভোট হলে তৃণমূল পেতে পারে 146 থেকে 156 টি আসন। বিজেপি পেতে পারে 113 থেকে 121 টি আসন। বাম কংগ্রেস 20 থেকে 28 টি আসন এবং অন্যান্যরা 1 থেকে 3 আসন। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে দ্বিতীয় দফার সমীক্ষায় আগের থেকে তৃণমূলের সম্ভাব্য আসন বেড়েছে আটটি, কিন্তু বিজেপির কমেছে নটি। সংযুক্ত মোর্চার সম্ভাব্য আসন বেড়েছে তিনটি।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে নানা সমীক্ষা প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব ও দলের রাজনৈতিক কৌশল বিদরা প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন যে, বিভিন্ন সংস্থা নিজের নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ও তথ্য থেকে সমীক্ষা করা হয়েছে। তাই এ ব্যাপারে আগ বাড়িয়ে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে বিজেপি মনে করছে না।
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা দখলের ম্যাজিক ফিগার হল 148। গতবারের থেকে আসন কমতে চলেছে তাদের। ভোট শতাংশে অবশ্য প্রথম ও দ্বিতীয় সমীক্ষাতেই তৃণমূল 42% দাঁড়িয়ে আছে। তবে বিজেপির ভোট শতাংশ 37 থেকে কমে 34 হতে পারে বলে সমীক্ষায় আভাস। সংযুক্ত মোর্চার ভোট শতাংশ থেকে বেড়ে কুড়ি হতে পারে ইঙ্গিত। রাজনৈতিক মহল মনে করছেন যে, অবাধ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস কে ক্ষমতায় আসতে লড়াই লড়তে হবে। তৃণমূলের ভোট ব্যাংক সংখ্যালঘু মুসলিমদের সমর্থনের কিছু অংশও আব্বাস সিদ্দিকীর আইএসএফ ভাগ বসালে যেমন তৃণমূলের ক্ষতি হবার সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনি সিপিএম হিন্দু উদ্বাস্তু ভোটে ভাগ বসালে কপাল পড়তে পারে গেরুয়া শিবিরেরও ।অর্থাৎ এই সমীক্ষার ফলাফল বলছে ক্ষমতায় আসতে চলেছে তৃণমূলই!!
0 comments:
Post a Comment