সিভিক ভলেন্টিয়ারদের আইনি বেড়াজালে বাঁধতে চাইছে রাজ্য?আর জি করের ঘটনার পরেই নয়া ভাবনা চিন্তা নবান্ন'র

 


Indiapost24 Web Desk:কলকাতার আরজি কর হাসপাতালের মর্মান্তিক ঘটনার তদন্ত করবে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই কে এই তদন্তভার দিয়েছে। কলকাতা পুলিশের তদন্তে খুশি নয় আদালত। অনেক ক্ষেত্রেই গাফিলতি চোখে পড়েছে। যার কারণে আদালতের পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম মামলার কেস ডাইরি দেখার পরে নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি এতদিন পর্যন্ত কলকাতা পুলিশ যে তদন্ত করেছে তার সমস্ত তথ্য সিবিআই এর হাতে তুলে দিতে হবে। সিসিটিভি ফুটেজ, তদন্ত সংক্রান্ত তথ্যাবলী, বয়ান সবকিছুই কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে সিবিআই কে। ‌ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর রাজ্যের মুখ্য প্রশাসনিক ভবন নবান্নতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেন কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েলের সঙ্গে। কিভাবে আইনগতভাবে সমস্ত তথ্য কেন্দ্রীয় এজেন্সির কাছে তুলে দেওয়া হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রী নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়েছিলেন এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন। পরিবারের সদস্যরা সিবিআই তদন্তের বিষয়ে সওয়াল করেছিলেন। অন্যান্য মহল থেকেও সিবিআই তদন্তের জন্য দাবি উঠেছিল। কলকাতার পুলিশ কমিশনার কে পাশে দাঁড় করিয়ে রবিবার পর্যন্ত ডেডলাইন দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এতদিন সময় কিসের জন্য লাগবে? প্রশ্ন ওঠে বিভিন্ন মহলে। তাহলে কি কোন কিছু লুকানোর পরিকল্পনা? এই সন্দেহের মাঝেই কলকাতা হাইকোর্ট এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার তদন্তভার সিবিআই এর হাতে দেয়। কিছুদিন আগেই কলকাতার এই হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় হয়েছে গোটা কলকাতা। এই ঘটনার ঝাঁঝ পশ্চিমবঙ্গ পেরিয়ে গোটা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আন্দোলন তুলেছে। এর মধ্যেই কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে একজন সিভিক ভলেন্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের সিভিক ভলেন্টিয়ারদের প্রতি বিরূপ মনোভাব বিভিন্ন সময় ফুটে উঠেছে। সিভিক ভলেন্টিয়ারদের বাড়াবাড়ি কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আরজি করের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার এবার সিভিক ভলেন্টিয়ার দের ব্যাপারে নয়া চিন্তাভাবনা শুরু করবে বলেই নবান্ন সূত্রে খবর। বহু ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা পুলিশকর্মী কম থাকার। আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব বহন করছে সিভিক ভলেন্টিয়ার। আইন অনুসারে সিভিক ভলেন্টিয়ার হাতে লাঠি, ওয়াকি টকি নিতে পারেনা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে সিভিক ভলেন্টিয়ার ভরসা হয়ে যাচ্ছে পুলিশের কাছে। আদালতের নির্দেশ অনুসারে সিভিক ভলেন্টিয়ার শুধুমাত্র পুলিশের 'সহযোগী' হিসাবেই কাজ করবে। থানায় ডায়েরি রেখা, গাড়ির লাইসেন্স চেক করা, কোন অভিযুক্তদের কোর্টে নিয়ে যাওয়া অনেক ক্ষেত্রেই সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দিয়ে করানো হচ্ছে।  সিভিক ভলেন্টিয়ারদের বাড়াবাড়ি রুখতে এবার সচেষ্ট ভূমিকা গ্রহণ করছে রাজ্য সরকার। নিয়মের বেড়াজালে বাধার জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে নবান্ন। অনেক ক্ষেত্রেই সিভিক ভলেন্টিয়ারদের খারাপ ব্যবহার, আইন বহির্ভূত কাজ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানুষ অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। এবার সিভিক ভলেন্টিয়ার দের আইনে বাঁধার কাজ শুরু করছে রাজ্য সরকার। কিভাবে তাদের আইন মাফিক কাজ করানো যাবে এবং পুলিশের শুধুমাত্র 'সহযোগী' হিসাবেই কাজ করানো যাবে তা নিয়ে খুব শীঘ্রই সিদ্ধান্তে আসবে বলেই সূত্রের খবর।

Share on Google Plus Share on Whatsapp



0 comments:

Post a Comment