Indiapost24 Web Desk:১৯৭৫ সালে সি আই এর প্রত্যক্ষ মদতে বাংলাদেশে জিয়াউর রহমানকে সামনে রেখে সেনা শাসন জারি হয়। তাঁর আগেই পরিকল্পিত ভাবে বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানকে সপরিবার হত্যা করা হয়। বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা। সি আই এ-আই এস আই অপারেশনে শুধু বাংলাদেশে স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে নয়, কঠিন চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল ভারতকে। স্বয়ং ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭৫-এর ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু পরিবারকে স-পরিবারে হত্যা ও সেনা শাসনে বিচলিত হয়ে পড়েন। সি আই এ কিভাবে সেনা ক্যু ও গণহত্যাকান্ডে মদত দিয়েছিল তাঁর লিখিত বয়ান, ঐতিহাসিক দলিল হিসাবে চিহ্নিত সুখরঞ্জন দাশগুপ্তের চাঞ্চল্যকর বই ‘মিড নাইট ম্যাসাকার ইন ঢাকা’তে।
১৯৭৫-র পর দীর্ঘ ৪৯ বছর বাদে নতুন করে সি আই এ-আই এস এ অপারেশনে শেখ হাসিনা গদিচ্যুত হলেন। আওয়ামি লীগ সহ স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ধারার জনগণ, গণ সংগঠনের ওপর আক্রমণ নেমে এসেছে। বি এন পি-জামাত বিরোধী হিসাবে চিহ্নিত হিন্দুদের ওপর নতুন হামলা শুরু হয়েছে। হিন্দু মন্দির, উপাসনালয়ে ভাংগচুর, আগুন লাগাতে আসরে জামাতে ইসলামি, হেফাজত সহ অন্য কট্টরপন্থী ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলি।
বাংলাদেশকে মৌলবাদী ইসলামিক রাষ্ট্রে পরিণত করার পাশে স্বাধীন বাংলাদেশের সব চিহ্ন মুছে ফেলাই জামাতে ইসলামির লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে তাদের মদতদাতা পাকিস্থানি গুপ্তচর চক্র আই এস আই। মার্কিন প্রশাসন ও সি আই এর লক্ষ্য বাংলাদেশে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুলে চীনের প্রভাব ঠেকানো। অন্যদিকে চীনের লক্ষ্য ভারতকে প্রতিবেশী দেশগুলি দিয়ে ঘিরে ফেলা। এই লক্ষ্যে চীন নেপাল, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, মায়ানমার, পাকিস্থান, আফগানিস্থান এমন কি ভূটানে নিজেদের রাজনৈতিক, সামরিক, অর্থনৈতিক জাল বিছিয়ে দেওয়ার জন্য সক্রিয়।
দক্ষিণ এশিয়ার ‘জিও-পলিটিক্যাল’ মানচিত্রে বাংলাদেশে মৌলবাদী চরম সাম্প্রদায়িক পাকিস্থানপন্থী ভারত বিরোধী শক্তির আত্মপ্রকাশ যে নতুন পরিস্থিতি তৈরি করেছে তা বলাই বাহুল্য। সেনার সাহায্যে বি এন পি-জামাতের ভারত বিরোধী ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি যে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের রাস্তায় যাবে তা নিয়ে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল।
জামাত, বি এন পি ও অন্য ভারত বিরোধী শক্তির আত্মপ্রকাশে বাংলাদেশের চীনপন্থীরা যে তাদের দোসর হবে তা নিয়েও নিশ্চিত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। ইন্দিরা গান্ধীর জীবিত কালেও বাংলাদেশে সেনা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে, বঙ্গবন্ধু পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হত্যা করে সি আই এ-আই এস আই নয়াদিল্লিকে চরম বার্তা দিয়েছিল। ৪৯ বছর বাদে নতুন মৌলবাদী অভ্যুত্থানেও নয়াদিল্লিকে মার্কিন প্রশাসন আবার নতুন বার্তা দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
0 comments:
Post a Comment