সুখেন্দু-শান্তনুদের ক্ষোভ থাকলেও আরজিকর ইস্যুতে প্রথম দল ছাড়ার সাহসী পদক্ষেপ জহরের

 


Indiapost24 Web Desk:আরজিকরের ঘটনা নিয়ে দলের প্রতি বিরাগভাজন হয়েছেন বর্ষীয়ান নেতা সুখেন্দু শেখর রায় থেকে শুরু করে শান্তনু সেন সহ অনেকে। তবে এখন পর্যন্ত সরাসরি দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেননি কেউই। এবরে এই সাহস দেখিয়ে দল ছাড়লেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার।


১৯৯৮ সালে দল গঠন হয়। এর পর থেকে ঘটেছে বহু দল ছড়ার ঘটনা । যদিও তালিকাটা দীর্ঘ। ২০০১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলের মর্যাদা পায় তৃণমূল। এই সময় বিরোধী দলনেতা হয়েছিলেন পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেস নীতি নির্ধারণ কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। পরে দলত্যাগ করে রাজনৈতিক সন্ন্যাস নিয়েছিলেন পঙ্কজবাবু।


সেই প্রথম পাঁচ বছরেই একে একে দল ছাড়েন নির্বেদ রায় এবং অরুণাভ ঘোষ। ২০১৫ সালে নতমস্তকে নির্বেদ সস্ত্রীক তৃণমূলে ফিরেছেন। আর রাজ্য রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গিয়েছেন অরুণাভ ঘোন। এমনকি তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বিদ্রোহ করে দল ছেড়েছিলেন। তিনিও ত্রিনয়নাকে নিয়ে এখন মমতার নেতৃত্ব স্বীকার করে নিয়েছেন। প্রয়াত তৃণমূল নেতা অজিত পাঁজাও বিদ্রোহী হয়েছিলেন। কিন্তু তিনিও ঘরে ফিরে মমতাকেই তাঁর নেত্রী মেনে নিয়েছিলেন প্রকাশ্যে। তবে এইসব ঘটনা ঘটেছিল তৃণমূল বিরোধী দল থাকাকালীন। 


২০১৭ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গেলেও মুকুল রায়ের মতো নেতাকেও মমতার কাছে ফিরে গুরুত্বহীন হয়ে যেতে হয়েছে। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে বড় ভাঙনের সম্মুখীন হয় ২০২০ সালে। শুভেন্দু অধিকারী -সহ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতারাও দল ছেড়েছিলেন। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং উদ্যোগী হয়ে দলে রাখতে আগ্রহী হননি। কিন্তু রবিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে নিজের সাংসদ পদ ছাড়ার কথা জানান তিনি। পরে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় তাঁর পদত্যাগের খবর। ওইদিন বিকেলেই জহরকে বোঝাতে ফোন করেন মমতা। দীর্ঘক্ষণ কথা হয় দু'জনের মধ্যে। সেই ফোন বরফ গলেনি। তাঁর পক্ষে যে দলনেত্রীর অনুরোধ রাখা সম্ভব হচ্ছে না, তাও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন জহর। এর আগে অন্য ইস্যুতে দল ছাড়লেও, সাম্প্রতিক এই ইস্যুতে প্রথম কেউ দল ছাড়লেন। তাঁর দলের কোনও নেতা আপাততো এমন সাহস দেখিয়ে দল ছাড়ার ঘোষণা করতে পারেননি। 




জহর সরকার তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার বিষয়ে মনস্থির করেই ফেলেছেন। এ বার পালা দিল্লি গিয়ে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার। আজ নিজের ইস্তফার পথ প্রশস্ত করতে দিল্লি যাচ্ছেন জহর। সাক্ষাতের সুযোগ পেলে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে রাজনীতির যাত্রা শেষ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি!

বিদায়ী সাংসদ বলেন, ‘‘মনস্থির যখন করেই ফেলেছি, তখন আর ইস্তফার জন্য বিলম্ব করতে চাই না। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এখন রাজধানীতে নেই। তাই দিল্লি গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আবেদন জানিয়ে আসব। তিনি ফিরলেই যাতে আমাকে সাক্ষাতের সময় দেন, সে ভাবেই আবেদন জানাব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘উপরাষ্ট্রপতি সময় দিলেই দিল্লি গিয়ে আমি আমার পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে আসব। অযথা সময় নষ্ট করতে চাই না।’’

জহর বাবুর পর এই ইস্যুতে এরপর আর কে কে ছাড়ার তালিকায় রয়েছেন এখন সেটাই দেখার।

Share on Google Plus Share on Whatsapp



0 comments:

Post a Comment