উৎসবের মরশুমে বাজার আগুন,জাঁতাকলে আমজনতা, সুফল বাংলাতেই ভরসা মানুষের

 



Srikarna,Indiapost24 Web Desk:উৎসবের মরশুম আর নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়বে না এটা কি হয়? প্রতি বছরের মত ফের উৎসবের মরশুমে মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে আনাজের দাম। পাশাপাশি ভোজ্য তেল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সমস্ত জিনিসের দাম ঊর্ধ্বমুখী। আমজনতা নাজেহাল।টাস্ক ফোর্স নামছে,বিভিন্ন বাজারে তারা যাচ্ছেন তবুও দাম কমছে না। শুধুমাত্র কলকাতা নয় রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতে একই পরিস্থিতি। গোদের উপর বিষফোঁড়া দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি। 'কাঁচা সবজির যা দাম তাতে হাতে ছ্যাঁকা লাগছে। সরষের তেলের দাম আগের থেকে বেড়ে গেছে। আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবার চলবে কি করে?' মহেশতলার বাসিন্দা পিউ মুখার্জির উস্মা প্রকাশ। দক্ষিণ কলকাতা যাদবপুরের বাসিন্দা উজ্জ্বল সেনগুপ্ত জানালেন,'শুধুমাত্র আনাজ-ভোজ্য তেলই নয়, গ্যাসের দাম তো আর কমছে না। ফলে পকেটের অবস্থা ভালো নয়।' 'নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে তার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক বার বৈঠক করেছেন।কিছুদিন আশার আলো দেখা যায়। তারপর যে কে সেই। মুখ্যমন্ত্রী তো আর পথে নেমে দাম নিয়ন্ত্রণ করবেন না। উনিতো নির্দেশ দিচ্ছেন। নির্দেশ অনুসারে দায়িত্বপ্রাপ্তরা কাজটা ঠিক করে করলে সমস্যার কিছুটা সমাধান হতো। সেটা কি হচ্ছে?' প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন উত্তর কলকাতার বাসিন্দা শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী। 



এই পরিস্থিতিতে টাস্ক ফোর্স -এর সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলের বক্তব্য কি? 'কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর জন্য এটা হচ্ছে। উৎসবের মরশুম তার উপরে বন্যা পরিস্থিতি।সেই সুযোগ অসাধু ব্যবসায়ীরা নিচ্ছে।' কিন্তু এই বক্তব্য তো প্রতি বছর একই রকম থাকে। সাধারণ মানুষের সমাধানের সুরাহা হয় না। শীতের মরশুম না এলে আনাজের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে হয় না। বিক্রেতা এবং এই ক্ষেত্রে থাকা বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের একই মত। টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের মতে,কলকাতায় নদিয়া হাওড়া উত্তর এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা থেকে আনাজ আসে। বৃষ্টির ফলে কিছুটা ক্ষতি হলেও জিনিস পত্রের দাম আকাশ ছোঁয়া হবে এমন অবস্থা হয়নি। 'অনেক জায়গাতেই বন্যা পরিস্থিতি হয়েছে। কিন্তু ফসল নষ্ট কম হলেও টানা বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে। ফলে দাম বেড়েছে' সাফ কথা গড়িয়াহাট বাজার সমিতির সভাপতি দিলীপ মন্ডলের। কলকাতার বিভিন্ন বাজারে আলুর দাম বেড়েছে। বেগুন,পটল,ঢেঁড়স,উচ্ছের দামও ঊর্ধমুখী। কিন্তু রাজ্য সরকার একেবারেই উদাসীন নয়। জিনিস পত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। বিষয়টিকে সামনে রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কলকাতা সহ বিভিন্ন জায়গায় সুফল বাংলার ভ্রাম্যমান গাড়ি পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া বেশ কিছু সুফল বাংলার স্টল রয়েছে। ভ্রাম্যমান গাড়ি এবং স্টলে কিছুটা কম দামে আনাজ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে সকাল সকাল সুফল বাংলার ভ্রাম্যমান গাড়ি এবং স্টলে ভিড় জমছে সাধারণ মানুষের। 'বাজারের অগ্নি মূল্যের সময় সুফল বাংলা সত্যিই আমাদের সাহায্য করছে। কিছুটা কম দামে আনাজ শাকসবজি পাচ্ছি। পুজোর সময় কিছুটা  সুবিধা হবে' হাওড়ার নবান্ন'র  সামনেই রয়েছে সুফল বাংলার স্টল। সেই স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন আঞ্চলিক বাসিন্দা গৌতম মুখার্জী। একই উৎসবের মরশুম অন্যদিকে বন্যার হাতছানি। আনাজের দাম যেমন ঊর্ধ্বমুখী কেমন ভোজ্য তেলসহ বিভিন্ন মশলা পাতির দামও বেড়েছে। এমনকি মাছের দামও বেড়েছে।  রাজ্য টাস্ক ফোর্সের আর এক সদস্যের মতে, গরমের সময় হয়তো কিছুটা সবজিতে টান পড়ে। কিন্তু উৎসবের মরশুম আর বন্যার দোহাই দিয়ে জিনিসপত্রের দাম লাগাম ছাড়া করার যুক্তি নেই। পক্ষে এবং বিপক্ষে মতামত রয়েছে। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম যেভাবে ঊর্ধ্বমুখী তাতে শেষ পর্যন্ত আমজনতাই ভুক্তভোগী।

Share on Google Plus Share on Whatsapp



0 comments:

Post a Comment