Indiapost24 Web Desk: আরজিকর কান্ড,রাজ্যে হিংসা-সন্ত্রাস। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ তীব্র দ্বন্দ্ব, সংঘাতের মাঝেও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক ছক্কা হাঁকালেন। প্রত্যাশিত ভাবেই পশ্চিমবঙ্গের ৬ বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচনে ঘাস ফুল শিবিরের জয় জয়কার হল। আবারও পশ্চিমবঙ্গে একদিকে গেরুয়া শিবির, অন্যদিকে কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া জোটে কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট শরিক সি পি এম সহ বাম শিবির অন্যদিকে সি পি আই(এম এল)-লিবারেশনের মত অতি বামপন্থী শিবির জোরালো ধাক্কা খেয়েছে।
অধিকাংশ আসনেই কংগ্রেস-বাম-অতি বাম লিবারেশনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। বিজেপির নিজের বিধানসভা আম মাদারিহাট জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এর ফলে উত্তরবংগে অশনি সংকেত দেখছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। আর এস এস অবশ্য পশ্চিমবঙ্গে এমন ফল হবে বলেই আগে মনে করিয়ে দিয়ে বিজেপিকে সতর্ক করে দিয়েছিল।
প্রতিকূল রাজনৈতিক আবহাওয়া, তৃণমূল দলের অভ্যন্তরে নবীন-প্রবীন দ্বন্দ্বের কোন ছায়া এবারের এই উপ নির্বাচনে দেখা গেল না। যা অবশ্য রাজনৈতিক মহলের একাংশ আগেই ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন। উপ নির্বাচনে বিশাল জয়ে ২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার দল তৃণমূল কংগ্রেস অনেকটাই এগিয়ে থাকলেন তা মানছেন বিজেপি ও বাম-অতি বামেদের শিবিরের নেতারাও। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেস দুর্ভেদ্য দুর্গ গড়ে তুলেছে। তাঁকে ভাঙা যে বিজেপি বা কংগ্রেস-বাম-অতি বামেদের পক্ষে সহজ নয় তার প্রতিফলন ঘটেছে উপ নির্বাচনের ফলে।
এবার আবাস যোজনার রাজ্য সরকারি অর্থ প্রদানের সিদ্ধান্তের পর আরো ৫ লক্ষ মহিলাকে লক্ষ্মী ভান্দারের আওতায় এনে ২৬-এর আগে তৃণমূল তার মাটি আরো শক্ত করার লাইন নিতে চলেছে। আই-প্যাক প্রতিটি রাজনৈতিক পরামর্শ ও কৌশল যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজনৈতিক ডিভিডেন্ট দিতে চলেছে তা নিয়ে একমত রাজনৈতিক মহল।
বাংলার ৬ কেন্দ্রে বিধানসভা উপনির্বাচনে বিপুল সাফল্য রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটা বড় অংশ এই নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন, তবে এরপরেও আরজি কর কাণ্ড থেকে শুরু করে একাধিক দুর্নীতি ভোটে ইস্যু হতে পারে কিনা তা নিয়ে চর্চাও ছিল। তবে শনিবার ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা গেল অন্তত এই উপনির্বাচনে বিরোধী বিজেপি থেকে শুরু করে বাম-কংগ্রেসের তুমুল তৃণমূল বিরোধিতা দাগ কাটতেই পারল না ভোটারদের মনে।
উত্তরবঙ্গের মাদারিহাটে ইতিহাস রচনা করল তৃণমূল। এই প্রথম আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট বিধানসভা আসনে ফুটল ঘাসফুল। উপনির্বাচনে জয় পেলেন তৃণমূল প্রার্থী। দক্ষিণবঙ্গের চেয়ে উত্তরবঙ্গে বি জে পি-র সাংগঠনিক শক্তি বেশি। একুশের নির্বাচনে
মাদারিহাট কেন্দ্রটি বিজেপির দখলেই ছিল। তবে উপনির্বাচনে সেটাও হাতছাড়া হল গেরুয়া শিবিরের।
এদিকে, বাংলার রাজনীতিতে বাম-কংগ্রেস যে এখনও প্রান্তিক শক্তি হিসেবেই রয়ে গিয়েছে এবারের ভোটে সেটা ফের একবার প্রমাণ হল। ৬ কেন্দ্রের কোনওটিতেই দাগ কাটতেই পারলেন না বাম-কংগ্রেসের প্রার্থীরা। হাড়োয়া কেন্দ্রটি এবার ISF-কে ছেড়েছিল বামেরা। ওই কেন্দ্রে বাম সমর্থিত আইএসএফ প্রার্থী পিয়ারুল ইসলাম দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। বাকি ৫ কেন্দ্রের পাঁচটিতেই বাম প্রার্থীদের জামানত জব্দ হয়েছে। এবারের ভোটেও ছন্নছাড়া দশা কংগ্রেসের। উপনির্বাচনে বামেদের সঙ্গে সমঝোতা না হওয়ায় একাই লড়েছিল কংগ্রেস। কংগ্রেস আলাদা করে প্রার্থী দিয়েছিল। ৬টি আসনেই কংগ্রেস প্রার্থীদের জামানত জব্দ হয়েছে।
0 comments:
Post a Comment